প্রিয়জনের কাছে চিঠি
সেলিনা হোসেন।
শরতের স্নিগ্ধ রাতের সদ্য ফোটা শিউলি শুভেচ্ছা নিও।
আজ নাকি বিশ্ব চিঠি দিবস?
ব্যস্ততা আর কাজের চাপে লেখার ফুরসত করে উঠতে পারছি না। চিঠি দিবস শুনেই লিখছি।।
আমরা তো সেই চিঠি র যুগের ই মানুষ। আমাদের শৈশব কৈশোর ও তারন্যে ও চিঠি ছিল।
আব্বা র পোস্টিং ঢাকা ছিল ; পরবর্তী তে দাদার ও পোস্টিং ঢাকা হওয়ায় বাপ ও বড় ভাই এর চিঠি বাসায় আসত!! প্রত্যেকের নামে ছোট ছোট চিঠি থাকত যাতে চিঠি র আনন্দ থেকে কেউ বঞ্চিত না হয়!!!
বিদেশে থাকা আত্মীয়দের চিঠি আসত। সেই বিদেশি স্ট্যাম্প খুলে স্ট্যাম্প খাতায় লাগাতাম!!!
কলেজ লাইফে কোন বান্ধবী র মাধ্যমে কেউ কোন চিঠি পাঠালে তা ধরা পড়ার সমুহ সম্ভাবনা ছিল। আমার ছোট বোন ছিল কঠিন স্পাই। তার মাধ্যমে বড় ভাই বোন জানলে চলত শাপ শাপান্ত র মুন্ডুপাত ভৎসনা এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মাইর থেরাপি।
তবুও থেমে থাকেনি চিঠি আসা। খাতার মাঝে বইয়ের ভাজে ডাইরির মাঝে সযত্নে লুকিয়ে রাখা ভালোবাসার গোলাপি চিঠি ; গোলাপের পাপড়ি ; কি আবেগ মিশ্রিত অমায়িক সুন্দর কথা মালা!!
বার বার পড়লেও পুরনো হত না। অভিমান হলেও সেই চিঠি হত মন ভালো করার টনিক। কখনও আমি চাঁদ; কখনও ফুল কখনও কবিতা কখনও কারও হৃদয়ে র রাজসিংহাসন দখল করা রানী!!!
৩০/৩২ বছর আগে র চিঠি র কথা পংক্তি ছন্দ গুলো আজও মনে হয়; এইতো সেদিন!!!
মেঘে মেঘে অনেক বেলা!! সুনীলের সেই বিখ্যাত কবিতা র মত বলতে ইচ্ছে করে কেউ কথা রাখে নি। আসলে কেউ কথা রাখে না।
সময়ের স্রোতে ভেসে গেছে প্রেম ভালোবাসা সব কিছু। সেখানে কালের সাক্ষী হয়ে রুঢ় বাস্তবতা র সাথে লড়াই করা লড়াকু সৈনিকের মত জীবন কে বয়ে বেড়াচ্ছি। অভিনয় করে বেড়াই জীবনের রঙমন্চে।
কি পেলাম কি হারালাম সেই হিসাব করি না।
তবু জানি লড়তে হবে
এ তরী বাইতে হবে
আমি যে সাগর মাঝি রে….
তীর হারা এই ঢেউ এর সাগর পাড়ি দেব রে….
আবার ও শুভ কামনা সকলের জন্য।
ইতি
সতীর্থ বন্ধু / ভার্চুয়াল বন্ধু।