নোয়াখালিকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে লন্ডন হাইকমিশনে প্রবাসীদের বৈঠক ও স্মারকলিপি প্রদান
লন্ডন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫ নোয়াখালিকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে লন্ডন হাইকমিশনে বৈঠক করেছে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত গ্রেটার নোয়াখালির প্রবাসীরা। পাশাপাশি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করেছেন তারা। এতে নোয়াখালি, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরকে একত্র করে “নোয়াখালি বিভাগ” ঘোষণার জোর দাবি জানানো হয়েছে।
আইঅন টিভির সিইও আতাউল্ল্যাহ ফারুকের পরিচালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম। এসময় আলোচনায় অংশ নেন, এ কে আজাদ, ডক্টর ফয়েজ মাহমুদ, ডক্টর গোলাম কবির, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মজিবুল হক, এম এ সালাম (ভিপি হারুন), মোতাহের হোসেন লিটন, ডক্টর মনোয়ার হোসেন, ক্যাপ্টেন গোলাম কিবরিয়া, মোজাহিদুল ইসলাম, আবু নাসের মোহাম্মদ মুজাহিদ সহ আরও অনেকে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, আশরাফ উদ্দিন, আনোয়ার চৌধুরী, আব্দুল হক রাজ, আব্দুর রব, আবুল হোসেন জসিম, আলি আকবর খোকন, রাকিব হোসেন-সহ গ্রেটার নোয়াখালীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
বৈঠক শেষে স্মারকলিপিটি হাইকমিশনারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, প্রায় এক কোটি মানুষের বসবাস, শক্তিশালী অর্থনীতি, সমৃদ্ধ ইতিহাস ও বিশাল প্রবাসী সমাজ থাকা সত্ত্বেও গ্রেটার নোয়াখালি এখনও প্রশাসনিক অবহেলায় পিছিয়ে আছে। দূরবর্তী চট্টগ্রাম বিভাগের অংশ হিসেবে থাকার কারণে উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সেবা প্রদানে বিলম্ব ঘটছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, স্বতন্ত্র নোয়াখালি বিভাগ গঠন করা হলে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থানীয় শাসনব্যবস্থা আরও কার্যকর হবে। নোয়াখালি, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে এই দাবির পক্ষে আন্দোলন করে আসছে।
প্রবাসীরা দাবি করেন, নোয়াখালি বিভাগের সম্ভাবনা অপরিসীম—এলাকার কৃষি, মৎস্য, লবণ উৎপাদন ও সম্ভাব্য প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদ দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। একইসঙ্গে পর্যটন ও নৌবাণিজ্যের বিকাশেও এটি হতে পারে একটি নতুন কেন্দ্র।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, প্রবাসী নোয়াখালিবাসীরা প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ ও বার্ষিক ২ থেকে ২.৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছেন, যদি নোয়াখালিকে পূর্ণাঙ্গ বিভাগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
তারা সতর্ক করে বলেন, গ্রেটার নোয়াখালিকে প্রস্তাবিত কুমিল্লা বা ‘মেঘনা বিভাগ’-এর সঙ্গে একীভূত করা হলে অঞ্চলটি উপেক্ষিত হবে এবং স্থানীয় জনগণের পরিচয় ও স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্মারকলিপিতে তিনটি সুপারিশ করা হয়েছে—
১. বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে দ্রুত পাঠানো,
২. প্রবাসী ও সরকারের মধ্যে একটি যৌথ গোলটেবিল বৈঠক আহ্বান,
৩. যত দ্রুত সম্ভব নোয়াখালি বিভাগ গঠনের গেজেট প্রকাশ।
প্রবাসীরা আশা প্রকাশ করেছেন, সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্বে নোয়াখালির এ ঐতিহাসিক দাবি শিগগিরই বাস্তবে রূপ নেবে।