১) পাগল হবো
পাগল হবো..পাগল!
পাগলামো করবো; করবো পাগলামি।
তোমার জন্য!
তোর জন্য!
তুই এর জন্য…পাগল হবো; পাগল।
পাগল হবো…পাগল!
তোর জন্যে মহালয়ে মিশে যাওয়া কোমল শৈশব;
প্রকৃতির শরীর ছিঁড়ে তুলে আনবো বিচ্ছিন্ন
সংসারের অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক।
তোর জন্যে কষ্টের সমুদ্র সাঁতরে…
যৌবন খুঁজে বেড়িয়ে পড়বো দৃশ্যহীন নাট্যাভিনয় জীবন।
তোর জন্যে পর্বত ভেঙে সমতল বসতি গড়ে
লিখিয়ে নেবো রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
তোর জন্যে সূর্যালোক দিয়ে রোদের মালা বানিয়ে পড়িয়ে দেবো চাঁদনী রাতের গৃহ শয্যার দেহের রঙিন কণ্ঠ।
তোর জন্যে পুরাতন দিঘি খনন করে বানাবো জলের উঠবোস নৃত্যানন্দের সংসার।
তোর জন্যে সভ্যতা গুড়িয়ে বানিয়ে তুলবো বর্ষা জলের সুদূর দিগন্ত।
পাগল হবো…পাগল!
পাগলী… তোর জন্যেই পাগল হবো!
তোর জন্যে পথহারা পথিকের
অনুসন্ধানী পাথেয়ের প্রতিবেদক হবো।
তোর জন্যে বিজ্ঞানের খড়গ উপড়ে
দার্শনিক জীবনে অভ্যস্থ হবো।
তোর জন্যে সমাজ ভাঙবো।
তোর জন্যে ধর্ম ভয় পরিহার করবো।
তোর জন্যে রাষ্ট্র শৃঙ্খল গুড়িয়ে দেবো।
তোর জন্যে সংসার ত্যাগ করবো।
পাগলী…তোর জন্যে শুধু তোর জন্যে…
তোর জন্যেই হবো পাগল।
পাগল হবো… পাগল!
তোর জন্যে সম্পাদক হবো।
তোর জন্যে সমাজতান্ত্রিক হবো।
তোর জন্যে সাম্যবাদী হবো।
তোর জন্যে বিপ্লব করবো।
তোর জন্যে বিদ্রোহী হবো।
তোর জন্যে সাহিত্যিক হবো।
তোর জন্যে কবি হবো।
তোর জন্যে কবিতা হবো।
পাগল হবো…পাগল…
পাগলী তোর জন্যেই পাগল হবো।
পাগল হবো…পাগল!
তোর জন্যে প্রতি সকালে সবুজ পাতা ছুবো, ফুল কড়াবো।
প্রতি দুপুরের রৌদ্রজ্জ্বল গাছের ছায়ায় দাঁড়াবো।
প্রতি বিকেলের ঝরা পাতার কান্না শুনবো।
প্রতিটি সন্ধ্যায় রক্ত গোধূলির আত্ম পৃষ্ঠায় লিখবো
পাগল-পাগলীর জগতখ্যাত কবিতা প্রেমী অক্ষয় উপমা।
পাগল হবো..পাগল!
তোর জন্যে খুনি হবো!
তোর জন্যে হাত কড়া পড়বো!
তোর জন্যে সর্বহারা হবো!
তোর জন্যে ফাঁসিতে ঝুলবো!
কিংবা…তোর জন্যেই পান করবো আর্তনাদ;
সক্রেটিসের রেখে যাওয়া অবশিষ্ট হ্যামলক।
২) কষ্ট পাঠ
আমাদের কষ্ট পাঠ চিরন্তন…
আমরা মাতৃগর্ভে দুঃখ-যন্ত্রণার সুস্পষ্ট সিলেবাস মুখস্ত করে ভূমিষ্ঠ হয়েছি।
শিশুকালে যখন আলোর মুখ দেখি তখন সূর্য কেমন যেন
সুখের চন্দ্রালোক ঢেকে রেখে…
আমাদের বুঝিয়ে দেয় সম্মুখ যুদ্ধের ভাষা।
আমরা যৌবনেও বঞ্চনার শিকার…
রাষ্ট্রনীতি বৈষম্য অনুশীলন… ধর্মনীতি ধনী-গরিব অ্যাসাইনমেন্ট…
কর্মনীতির ভ্রান্ত মন্তব্য…আমাদেরকে উত্তেজক দ্রব্যের মতো করে তোলে।
আমরা পথ খুঁজে পাই… বিপরীত পাথেয়ের অবস্থান…
আমরা উপদেশের অনুলিপিতে খুঁজে পাই… প্রত্যাখ্যানের পান্ডুলিপি।
আমরা কর্ম খুঁজে পাই… অনাহারে, অর্ধাহারে থাকার ধর্মীয নিশ্চয়তা।
আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে বৃষ্টি জল…
শরীর ভিজিয়ে বাধ্য করে দিন কর্ম নিম্ন মূল্যে…
আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ বাধায় পুঁজিবাদ,
ভোগ বিলাস ও দেহ চর্চা আমাদের নাচায় নিত্যদিন,
আমরা জন্মসূত্রে বঞ্চনার শিকার,
আমরা পরিবার সূত্রেই অপ্রাপ্তির শিকার,
আমরা ধর্মীয় তত্ত্বের উঁচু-নিচু বাস্তবতাপ্রতিষ্ঠার নিয়ামক,
আমরা প্রতিবেশী হতে প্রাপ্ত প্রতারণা ব্যক্তিত্ব
আমরা স্বজন আপন থেকে অপ্রাপ্তির তালিকা সূচি।
কান্না আমাদের সান্ত্বনা,
ধর্মীয় উপদেশ বাণী আমাদের প্রাপ্তি,
আমাদের লেবাস নেই, আমাদের কর্ম নেই,
আমাদের খাদ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই, আমাদের বসত নেই,
আমাদের বস্ত্র নেই আমাদের নেই ধর্মীয়-সামাজিক সভ্যতা।
কঠিন বাস্তবতার মধ্যে আমাদের আদর্শ দর্শন টিকিয়ে রাখাই শপথ,
পা ভেঙে গেলেও আমরা পিছু হটি না,
হাত শক্তিহীন হলেও আমরা আমাদের কর্ম বন্ধ করি না,
দেহ অসার হলেও আমরা মাথা নত করি না,
গৃহে খাদ্য না থাকলেও আমরা হাত পাতি না
রাষ্ট্রধর্ম ভয়ে় আমরা মাথা নত করি না।
আমরা স্বজন চিনিনা, আমরা সংসার চিনি না,
আমরা দেশ চিনি না, আমরা পতাকা চিনি না ..
আমরা চিনি খাদ্য! আমরা চিনি বস্ত্র!
আমরা চিনি বসত ! আমরা চিনি শিক্ষা !
আমরা চিনি স্বাস্থ্যের সমান নিশ্চয়তা প্রাপ্তির রাষ্ট্র নীতি ।
জন্ম সূত্রে প্রাপ্ত আমাদের অর্জন
শুধু যুদ্ধ! যুদ্ধ! যুদ্ধ!
শুধু সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার, শুধু সমবন্টন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার,
শুধু শ্রেণি বৈষম্য ধ্বংসের, শুধুই লড়াই! লড়াই শুধু লড়াই!!