৫ আগস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত শাওনের দেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকা যাত্রাবাড়ি চৌরাস্তায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শাহাদাত হোসেন, যিনি শাওন নামে পরিচিত, তার মৃতদেহ ৯ মাস ২০ দিন পর সেনবাগের পারিবারিক কবরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ঢাকা সিআইডির ক্রাইম সিনের একটি প্রতিনিধি দল এবং সেনবাগ থানা পুলিশের উপস্থিতিতে এই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। শাওনের লাশ সেনবাগ উপজেলার ২নং কেশারপাড় ইউনিয়নের খাজুরিয়া সর্দারপাড় ৩নং ওয়ার্ডের দিঘলী বাড়ির পারিবারিক কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে শাওনের দেহ পুনরায় দাফন করা হবে বলে জানান সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি এমরান হোসেনের নেতৃত্বে সিআইডির ক্রাইম সিনের একটি দল, সেনবাগ থানার (ওসি তদন্ত) হযরত আলীর নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি দল, সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার কামাল উদ্দিন, কেশারপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল হক সুমন, উপজেলা ছাত্র সমন্বয়ক প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন, নিহত শাওনের পিতা মোঃ বাছির আলম, বড় ভাই মোঃ হানিফ এবং এলাকার শতশত উৎসুক ছাত্রজনতা।
জানা যায়, কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি দিয়ে দেয়। এই সুযোগে বাবার ব্যবসার সুবাদে ঢাকা থাকায় শাওন তার পিতা মোঃ বাছির আলম এবং বড় ভাই মোঃ হানিফের কাছে ঢাকায় বেড়াতে যায়। এরই মধ্যে সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবীতে দেশব্যাপী বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলে শাওন যাত্রাবাড়ি এলাকায় আন্দোলনে যোগ দেয়। সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনার পদত্যাগের ২ ঘণ্টা আগে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার সঙ্গে শাওন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। এ সময় পুলিশের নির্বিচার গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় শাওন। ভাইকে উদ্ধার করতে গিয়ে তার বড় ভাই মোঃ হানিফও পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন মঙ্গলবার ৬ আগস্ট শাওনের লাশ সেনবাগের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। শাওন ছিল ৪ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সবার ছোট। পরিবারের সদস্যরা তাদের ছোট ছেলেকে হারিয়ে শোকাহত।
নিহত শাওনের পরিবার সরকারের কাছে এবং আদালতের নিকট একটিই দাবি জানাচ্ছে, যাদের নির্দেশে নির্মমভাবে শাওনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তাদের ফাঁসির দাবি করা হচ্ছে।