ভালোবাসার প্রতিশোধ। গল্প। ইফতেখার হোসেন

জীবনের গল্প - ৮

by protibimbo
০ মন্তব্য ১৫৯ বার পড়া হয়েছে

ভালোবাসার প্রতিশোধ
ইফতেখার হোসেন

মিলিকে ইদানিং একটা ছেলে মেসেজ পাঠায়। মিলিরা ফার্মগেটে এক কোচিং সেন্টারে যায়, ছেলেটা যায় অন্য সেন্টারে। কয়েকমাস পর সবার এইচএসসি পরীক্ষা। কোচিং রমরমা। পড়াও হয়, আড্ডাও। সব কোচিং সেন্টার যে খারাপ, তাতো না। ছেলেটা কিভাবে যেন মিলিকে চেনে। নটরডেমের। প্রথম দেখাতেই মিলিকে পছন্দ।
মিলি তার বান্দ্ববী সারা, সুমি আর রিনু কে খুলে বললো ঘটনা। সে প্রেমের ধারে কাছে নেই, কিন্তু ছেলেটার মেসেজগুলি সুন্দর আছে। ছেলেটাকে এখনো সে দেখে নাই। সবাই বললো, প্রেম করার দরকার কি, ছেলেটিকে দেখি। ছেলেটা যদি ভালো হয়, তাহলে বন্ধু হলো। ভালো না হলে বলতে হবে ভাইয়া, মিলির প্রেম আছে। ব্যাস , সহজ সমাধান।
মিলি ছেলেটাকে তাদের কোচিং সেন্টারে আসতে বললো। নাম আকাশ। আকাশকে দেখে চারজন উল্টে পড়লো। মাস্তান টাইপ চেহারা, পোশাক। গলায় নেকলেস, এক কানে দুল। জিনসের প্যান্ট ৫ জায়গায় ছেঁড়া। এতে কোনো সমস্যা ছিলোনা। হ্যান্কু পাংকু ছেলে সব মেয়েরই প্রিয়। সমস্যা হলো মিলির কাঁধের সমান হাইট আর কথায় পুরা রয়্যাল ডিস্ট্রিক্ট এর টোন। কাজেই প্ল্যান মাফিক আকাশকে বলতে হলো ভাইয়া, মিলির তো প্রেম আছে। আপনাকে ফোনে বললে তো বিশ্বাস করতেন না। সেজন্য সামনে সামনি বললাম।
আকাশ বললো, আমি জানি ওর প্রেম নেই।
সবাই জোরালো গলায় বললো যে আকাশ ভাইয়া ভুল জানে। মিলির গভীর প্রেম।
আকাশ বললো তাকে ছেলেকে দেখাতে হবে, তাহলে সে বিশ্বাস করবে। নাহলে প্রতিশোধ।
সবাই তখন বললো মিলির সাথে যার প্রেম, সে ঢাকার বাইরে। আসতে ৪/৫ দিন লাগবে।
আকাশ এক সপ্তাহ সময় দিল।
আকাশ প্রতিদিন খোঁজ নিতে লাগলো ছেলে আসছে কিনা, আর ৬ দিন, আর ৫ দিন। ..
মিলিরা পড়লো ভয়াবহ চিন্তায়। এখন কোথা থেকে প্রেমিক হায়ার করা যায়?
সারা বললো তার কাজিন রিশান ভাই খুলনা ইউনিভার্সিটি পড়ে। শুক্রবারে ঢাকা আসবে। রিশান ভাই কিছুক্ষনের জন্য প্রেমিকের অভিনয় করতে পারে। শেষ পর্যন্ত প্ল্যান ঠিক হলো। শনিবার রিশান ভাই ওরফে রিশকে নিয়ে মিলি বেইলি রোডে খেতে যাবে। তখন আকাশ এসে দেখে যাবে, দরকার হলে কথাও বলবে, কফিও খেতে পারে।
সবাই বললো আকাশকে বিশ্বাস নেই, সে তার ফ্রেন্ড নিয়ে এসে মারামারি লাগাতে পারে। রিশান বললো চিন্তার কিছু নেই। আমার চার পাঁচজন বন্ধুকে আসতে বলবো। আমার সাথে নটরডেমে পড়তো। এখন ঢাবি। ওরা রেস্টুরেন্টের উপরের রুমে বিলিয়ার্ড খেলবে। দরকার হলে এসে মারামারি করবে।
দেখা গেল আকাশ সত্যি তার ৪ জন ফ্রেন্ড নিয়ে হাজির। আকাশের ফ্রেন্ডরাও চলে গেল বিলিয়ার্ড রুমে। সেখানে দেখা গেল সবাই সবাইকে নটরডেম ক্যাম্পাস আর কোচিং সেন্টার থেকে মোটামুটি চিনে। তারা সবাই আরাম করে বিলিয়ার্ড খেলতে লাগলো। মারামারি করার কোন উৎসাহ দেখা গেলোনা। আকাশ মিলি আর রিসান এর সাথে কিছুক্ষন বসে কফি খেয়ে উদাস মনে চলে গেল। আকাশ আজকে খুব ছিমছাম ড্রেসে। কানে দুল, গলায় নেকলেস নেই। ভদ্র চেহারা।
সাতদিন পরে আকাশ মিলিকে ফোন করলো।
– রিসান ভাইয়ের সাথে যে তোমার প্রেম নাই আমি সেদিনই জানি। পাতানো প্রেমিক। এমন না করলেও পারতা। আমাকে বললেই হতো। আমিতো আর জোর করে প্রেম করতাম না। তুমি আমার সাথে প্রতারণা করলা। সম্মান বাঁচাতে আমাকে প্রতিশোধ নিতে হবে। সরি।
– প্রতিশোধ ভাইয়া? আমি খুব সরি।
– প্রতিশোধের ব্যাবস্থা করে তারপর তোমাকে ফোন দিছি। গুলি ছুটে গেছে। কিছু করার নাই। নটরডেম কলেজের প্রত্যেক বাথরুমের দেয়ালে তোমার মোবাইল নাম্বার আর ল্যান্ড ফোন নাম্বার লিখে দিছি। আমি আর তোমাকে জ্বালাবো না। পড়ালেখা আছে. স্ট্যান্ড না করলে বাবা ঠ্যাং ভেঙে দিবে। বাই বাই।

সম্পর্কিত খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল খায়ের 

নির্বাহী সম্পাদক: 
বার্তা প্রধান:

অফিস: বাড়ি ০৭, সড়ক ১৪/সি, সেক্টর ৪,

উত্তরা, ঢাকা-১২৩০।

যোগাযোগ: ০১৭১৫৩৬৩০৭৯

বিজ্ঞাপন: ০১৮২৬৩৯৫৫৪৯

Email: khair.hrm@gmail.com

info@dainikprotibimbo.com

protibimboprokash.com

Facebook

©2025 Dainik Protibimbo – All Right Reserved. Designed and Developed by Bangla Webs