বৈশাখী ভালোবাসা
আমিনুল ইসলাম
তুমি তো জানো সুমনা, আমি এক পুরোনো পৃথিবী;
বহুবার বর্ষায় ভিজেছি, শুকিয়েছি শীতে,
ফাগুনে ফুটেছি, আর পুড়েছি খরায়,
এমনি করেই পার হয়ে এসেছি এতগুলো বছর
আজ এই এলপিআর-যৌবনে
আবারও নতুন করে জেগে উঠতে চাই,
সুমনা, তুমি কি আমার নববর্ষ হবে?
না সুমনা, এটা কোনো ভীমরতি নয়,
বলতে পারো— এ আমার অতৃপ্ত বাসনার পুনর্জন্ম!
ভালোবাসার ছন্দে পা ফেলে যদি আসো আমার
এই মাটিগন্ধী হৃদয়ে,
অর্থমন্ত্রীর ঘাটতি বাজেট কোনো বাধা হবে না,
ভালোবাসার রেমিট্যান্স আছে না !
তা দিয়ে তোমাকে বরণ করে নিতে স–ব করবো;
ফেলে আসা সময়ের মেলা থেকে খুঁজে আনবো
তালপাতার বাঁশি,
ভেঙে যেতে বসা চরবাগডাঙ্গার হাট থেকে কিনে
আনব নানা ডিজাইনের বাতাসা,
মহারাজপুরের হাটে ভবেশদার দোকানটা আজো আছে,
আছে আমবাগানের সেই ছায়াটিও,
সেখান থেকে কিনে নেব মচমচে তিলের খাজা,
একবার খেয়ে দেখো,
এসবের কাছে নস্যি–
ফ্রিজে রাখা যমুনা ফিউচার পার্কের আইসক্রিম
বলো সুমনা,– তুমি আসবো তো?
যদি আসো, শম্পার কাছে চেয়ে নেব পানের খিলি,
দেখবে, এমনভাবে রাঙবে তোমার ঠোঁট,
ল্যানকাম লিপিস্টিকের কোনো প্রয়োজন হবে না;
যদি আসো, রাবেয়া বসরী নেচে নেচে গাইবে লালনের গান
সাকিরার বেলিড্যান্স ভুলে গিয়ে
তুমিও হয়ে উঠবে হাততালি–ওয়ান মোর! ওয়ান মোর!
যদি আসো, এক সপ্তাহের ওয়ারান্টি দিতে পারি,
অফিস কোনো বাধা হবে না,
নমিতা হালদার যতই কাজ-পাগল হউক
আর আমাদের করে রাখুক—
টি-টুয়েন্টি ম্যাচের মতো টানটান,
বিএমইটির ডিজি জানেন, জানি আমিও,—-
ভালোবাসার প্রতিও তার পক্ষপাত আছে,
চাওয়ার সাথে সাথেই মঞ্জুর করে দেবেন
ছুটি–যাও যাও, তোমরা ঘুরে আসো!
তো তুমি সবুজ শাড়ি, আমি লাল পাঞ্জাবি,
টিএসসি-জুটিদের সাথে পাল্লা দিয়ে আমরা ঘুরব-
রমনা পার্ক থেকে চন্দ্রিমা উদ্যান,
মাঝে আরও কত কী!
অতঃপর বিকেলে রাজউকের ক্রেনকে একপাশে রেখে
তুরাগ নদীর তীরে গিয়ে–
কাশবনে ওড়াবো ভালোবাসার ঘুড়ি।
লাল রোদ মাখা বাতাসের পিঠে চড়ে ভেসে আসবে
নজরুলের গান–
তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল-বোশেখীর ঝড়!!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
আসবে সুমনা– আসবে তুমি-
বিরহের খরা দুপায়ে মাড়িয়ে-
সাথে নিয়ে ভালোবাসার এক বোশেখ ঝড়বৃষ্টি?