বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে ন্যাশনাল জব পোর্টাল (www.jobs.gov.bd)
যা একটি আধুনিক, স্মার্ট ও পূর্ণাঙ্গ end-to-end রিক্রুটমেন্ট সিস্টেম। এই সিস্টেমটি দেশের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজ ও গতিশীল করবে। এটি একটি ইন্টেলিজেন্ট, ইন্টিগ্রেটেড এবং ইন্টার্যাক্টিভ সিস্টেম, যা প্রার্থীদের জন্য সময় বাঁচাবে, স্বচ্ছতা বাড়াবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়াকে গতিশীল করবে। ন্যাশনাল জব পোর্টাল (NJP) এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে চাকরি প্রার্থীরা এবং নিয়োগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান উভয়ে সহজে, স্বচ্ছভাবে এবং কার্যকরভাবে নিয়োগ সংক্রান্ত কাজ সম্পাদন করতে পারে। Enhancing Digital Government & Economy (EDGE) প্রকল্পের সার্বিক তত্ত্বাবধানে Synesis IT সিস্টেমটি নির্মাণ করেছে। প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে এমন একটি যুগোপযোগী সিস্টেম তৈরিতে যুক্ত থাকতে পেরে দারুণ লাগছে, বলে জানিয়েছেন- প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত আইটি বিশেষজ্ঞ কবির আল মামুন।
এই সিস্টেমে চাকরি প্রার্থীদের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ফিচার হলো একটি ইউনিক প্রোফাইল, যেখানে একবার তথ্য ইনপুট করলেই ভবিষ্যতে যেকোনো নিয়োগে তা বার বার ব্যবহার করতে পারবে। প্রার্থী মাত্র কয়েক ক্লিকেই সহজে অনলাইনে আবেদন সাবমিট করতে পারে, যা সময় এবং কষ্ট উভয়ই বাঁচায়। অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে-এর মাধ্যমে বিকাশ, নগদ, কার্ড বা ব্যাংক—যেকোনো মাধ্যমেই আবেদন ফি পরিশোধ করা সম্ভব। আবেদন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে যেমন—আবেদন গৃহীত হওয়া, শর্টলিস্ট হওয়া, পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা, ভাইভা আহ্বান ইত্যাদি—প্রার্থীরা নোটিফিকেশন পায়, পুশ নোটিফিকেশন, ইমেইল বা এসএমএস-এর মাধ্যমে। যদি কোন সমস্যা হয়, তাহলে রয়েছে টিকেটিং সিস্টেম, যেখানে প্রার্থী টিকিট ইস্যু করে সমস্যার সমাধান চেয়ে যোগাযোগ করতে পারে। তার পাশাপাশি, চ্যাটবট ও লাইভ চ্যাট সাপোর্ট থাকায় তাৎক্ষণিক সহায়তা পাওয়া যাবে।
এখানে শুধু প্রার্থীর সুবিধাই নয়, নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান-এর জন্যও রয়েছে মডিউল। তারা খুব সহজে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারে এবং প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ করতে পারে। পরীক্ষার জন্য তৈরি করতে পারে এক্সাম শিডিউল, বেছে নিতে পারে পরীক্ষা কেন্দ্র, শটলিস্টিং এবং করতে পারে সিট প্ল্যান ও সিট বন্টন। অত্যাধুনিক এক্সাম কন্ট্রোলার সিস্টেম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় সমগ্র পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা। এতে রয়েছে প্রশ্ন ব্যাংক তৈরি ও সংরক্ষণের সুবিধা, যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের প্রশ্ন সংরক্ষণ করে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া, সিভি ব্যাংক তৈরি করা সম্ভব, যা ভবিষ্যতের নিয়োগে প্রার্থীদের দ্রুত মূল্যায়নে সাহায্য করে। চাকরির ধরণ অনুসারে নেওয়া যায় MCQ, লিখিত, ভাইভা কিংবা প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষা—সব কিছুই সাপোর্ট করে এই পোর্টাল।
সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হলো, এতে রয়েছে অটো প্রোক্টরিং ফ্যাসিলিটি, যার মাধ্যমে অনলাইন পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর আচরণ পর্যবেক্ষণ করে পরীক্ষার স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। এই পোর্টালটি শুধুমাত্র ওয়েব নয়, রয়েছে একটি মোবাইল অ্যাপ-ও, যাতে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরাও যেকোনো স্থান থেকে আবেদন, ফলোআপ বা তথ্য দেখতে পারবেন। সব মিলিয়ে, ন্যাশনাল জব পোর্টাল একটি স্মার্ট, স্কেলেবল, মডুলার এবং ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল সল্যুশন, যা নিয়োগ প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি ডিজিটাইজ করবে। সময়, খরচ ও শ্রম—তিনটিই কমিয়ে আনবে।