ভুলেও ক্ষমা করোনা আমাদের
নাজমা বেগম নাজু
ওর মাথার ভেতরে –
প্রতি অণুকোষে- থ্যালামাস হাইপোথ্যালামাস
জাইরাস সালকাসের প্রত্যন্ত পরমানুর গহিনে
পুরোটা বাংলাদেশ ছিল। বোশেখের রৌদ্রতটে
হেমন্তে শ্রাবণে কার্তিকে —
জোছনায় অমাবস্যায় – হাসিকান্নায়
জীবনের মাঝে লুকিয়ে থাকা আরেক জীবন
প্রিয মাতৃভূমি ছিল-
সকাল-দুপুর রাতের পুরোটা সময়।
ওর স্বদেশ প্রেমী মস্তিষ্কটাকে বিক্ষত করেছিল
তিনটে প্রাণনাশী বুলেট।
জী -, আশিকুর নামের দেশ অন্তপ্রাণ
সেই কিশোরের কথাই বলছি।
অনেক সাধ্য সাধনায় চিকিৎসক
তার দুটো বুলেট অপসারণ করেছিল ঠিকই
তৃতীয়টি আর পারেনি।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত
কিশোর মস্তিষ্কের গুরুতর জখম নিয়েও
বুকভরা ভালোবাসায় মাতৃভূমি মা’কে আগলে রেখেছিল।
বিক্ষত মস্তিস্ক নিয়েও আশিকুর
দেশকে ভালোবাসার, বাঁচার স্বপ্ন দেখেছিল।
দীর্ঘ ন’টি মাস অপেক্ষায় ছিল সে।
স্বপ্ন দেখেছিল উন্নত চিকিৎসার অংগীকারে
আমরা পাশে দাঁড়াব।অনেক দাম দিয়ে কেনা
মাতৃভূমির স্বাধীনতার কাছে
ওর সুস্হতা চেয়ে নেব।
দীর্ঘ ন’টি মাস আশিকুর আমাদের অপেক্ষায় ছিল।
মাথার যন্ত্রণাটা বড্ড ভুগিয়েছে ওকে।
কোনো একদিন কেউ হয়তো এসে ওর সব কষ্ট মুছে দেবে –
এই আশায়
রাত জাগা মাথার যন্ত্রণাটাকে
ভুলে যেত বার বার।
অগুণন নিমেষ দিন আর মাস পেরিয়েছিল আশিকুর –
আমাদের অপেক্ষায়। আমরা দিব্যি ভুলে ছিলাম
অবশেষে সব ভুলে চলেই গেল সে
আশিকুর- প্রাণপ্রিয় সন্তান আমার
আমার স্বাধীন মাতৃভূমির–
ভুলেও ক্ষমা করোনা আমাদের–