জিয়ার দর্শনকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করতে পারেনি: মঈন খান
“শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন উৎখাত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হাতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন,” বলেন তিনি।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের দর্শনকে আওয়ামী লীগও অস্বীকার করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান।
তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতীয়তাবাদকে ভিত্তি করে দীর্ঘদিন দেশ শাসন করার পরেও তারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে কোনো পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয় নাই। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে বাস্তবতা, যে যুক্তিবাদ, তার যে দর্শন- সে দর্শনকে আওয়ামী লীগও অস্বীকার করতে পারেনি।”
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনিস্টিউটের অডিটোরিয়ামে ‘শহীদ জিয়া ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ শীর্ষক আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাঙালি জাতীয়তাবাদের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মঈন খান বলেন, “এদেশে চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, হাজং, মুরং, খাসিয়া, রাজবংশী, কোল, ভিল, মুন্ডা, কোচ, লুসাই এবং এরকম সব মিলিয়ে প্রায় ৫০টি উপজাতি রয়েছে।
“তাহলে আমরা এই দেশে বাস করে আমাদের জাতীয়তাবাদকে যদি বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলি সেটা কেমন হবে? সেটা কি সঠিক হবে?”
তিনি বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তার সমাধান দিয়েছিলেন অত্যন্ত চমৎকারভাবে সুন্দরভাবে। তিনি (জিয়াউর রহমান) বলেছিলেন, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ একটি পুষ্পমাল্যের মত।
“যে পুষ্পমাল্যে বাঙালি একটি ফুল এবং সে ফুলটি হয়তো আকারে বড়; কিন্তু সেই পুষ্পমাল্যদের মধ্যে আরো যে ফুলগুলো রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে এই বিভিন্ন উপজাতি।
“তার সমাহারে যে জাতি সৃষ্টি হয়েছে এবং যে জাতীয়তাবাদ সৃষ্টি হয়েছে; তার নাম তিনি করেছিলেন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ।”
বাঙালি জাতীয়তাবাদকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মঈন খান বলেন, “আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদের ভিতরে মাত্র ১১ মিনিটের ব্যবধানে গণতন্ত্রের কবর রচনা করে একদলীয় শাসন বাংলাদেশে কায়েম করেছিল। সেখানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন উৎখাত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হাতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।”
অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, “এ শতকের মধ্যেই বৃহত্তর ভারত একাধিক জাতি রাষ্ট্রে খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যাবে। তবে ভারতবাসী কোনোভাবেই বৃহত্তর ভারতের মায়া ত্যাগ করতে পারবে না।
“আমরা যতদিন না পর্যন্ত নিজেদের পরিচয় নিয়ে গর্ববোধ করতে পারব, ততদিন পর্যন্ত আমাদের সার্বভৌমত্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি থাকবে। বাংলা ভাষার সাথে বাঙালি মুসলামানের মধ্যে যে সম্পর্ক তার মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িকতা নেই।”
কবি আল মুজাহিদী বলেন, “স্বাধীনতার আবর্তনের মুহূর্তে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া জাতি, জাতিসত্তা, জাতীয়তা সর্বোপরি লিবার্টি (স্বাধীনতা) এবং সভরেন্টি (সার্বভৌমত্ব) ধরে রাখতে জাতিকে ডাক দিয়েছিলেন।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি শাহীন রেজা, সঞ্চালনা করেন কবি শহিদ আজাদ। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ‘চেতনায় জাতীয়তাবাদ’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
৭৯