১) নদীর নামে নাম
সাঈদা আজিজ চৌধুরী
এই হারানো অরণ্যে কেউ আসবে বলে
শিমুল পলাশ নিশি জাগে নতুন শপথ করে
কেউ আসবে বলে কুহু পাখি ডাকে অগোচরে
এই পৃথিবীর হাজার পথের চোখ তাকায় দূরে
মেঘের কালো চোখে কাজল মেখে
অঝোর বৃষ্টির জলে কেউ আসবে বলে।
বৃক্ষময় বনস্পতির রৌদ্রকেলি বাতাসের রসায়ন
শুভ্র নীরবতায় চূর্ণ অহমের সৌধ ধ্রুপদী আলিঙ্গন
ভেঙেচূরে পাহাড়ী জল নামে কেউ আসবে বলে
আঁধার ঠেলে জোয়ার আসে সাগর নীলে
আকাশ দেখে দুঃখগুলো শূন্যে ডানা মেলে
অবচেতনে কতো ফুল ফোটে কেউ আসবে বলে।
জিজীবিষার অতলান্তিক আকাঙ্ক্ষা রোদ হয়ে ঝরে
অযুত রাতের কান্না তারা হয়ে ফোটে আকাশ জুড়ে।
স্রোতহীন নদী জলোচ্ছ্বাসে হাসে ফেনা তুলে
শ্যাঁওলা পুকুরে যৌবন ফিরে শত কোলাহলে
অভিমানের সমর্পণে অনায়াসে মুহূর্ত গলে
নদীর নামে নাম রাখে মেয়ে কেউ আসবে বলে।
২) নিশি পুরাণ মায়াবন
সাঈদা আজিজ চৌধুরী
কার কাছে যাবো যদি বলে দাও
কিভাবে লুকিয়ে রাখবো বিষন্ণ বিষাদ?
ফুল ফসলে হেমন্ত মাঠ হাসে সোনারঙ আকাশ
দখিণের দুয়ারে ফাল্গুন আসে হাতখানি ধরবে বলে
নির্বাক বিস্ময়ে আমিও যে হাসতে চাই
চেয়ে দেখি অলীক স্বপ্ন কেউ কাছে নাই
সোনালি দিগন্ত নীচে রেশম আলো নাচে
শস্যের ডগায় রঙ বেরঙ ফড়িং অপরূপ স্তবগান
অন্তর্গত স্পর্ধায় স্বাপ্নিক তারুণ্য আকাঙ্ক্ষা
জীবন আর প্রাণপ্রকৃতি মিলেমিশে একাকার
ধলেশ্বরীর জীবন মিশে অসীম তরঙ্গে সমুদ্র মোহনায়
অশান্ত ঢেউ অস্থির টঙ্কার আনন্দ বেদনা ঢেলে দেয়
মানুষ কোথায় যায় কোন অনন্ত দিগন্ত আশ্রয়
যদি বলে দাও,যদি বলে দাও কোন ঠিকানায়?
নন্দিত নিসর্গ হাতছানি রঙিন পালক কুড়াই
জ্যোৎস্না দেখে দ্বিগুণ উচ্ছ্বাসে হাত বাড়াই
দুঃখরাও দৌড়ায় ছায়ার মতন পেছন পেছন
ক্রমশ হেঁটে যাই সম্মুখ পথে স্যাঁতস্যাঁতে দহন
নিরুদ্দেশের ঠিকানা রহস্য মায়াবন নিশি পুরাণ
কার কাছে যাবো বাতাসের কানে ফিসফিস বলে দাও