ইতালি প্রবাসী কবি মো. সাজ্জাদ হোসেন জামাল-এর দুইটি কবিতা।
১) অভাব
মো. সাজ্জাদ হোসেন জামাল
তিন অক্ষরের জটিল শব্দে মোড়ানো নাম অভাব,
রাজা প্রজা সকলেই তোমার নাম শুনলে ভয় পায়,
তোমার ভয়ে তটস্থ কখন কার দুয়ারে হানা দাও,
তোমার নাম শুনিলে সবার ঘুম হারাম হয়ে যায়।
আটাশ বছর বয়সে কোন একক্ষণে এসেছিলে তুমি,
মনে পড়ে পাঁচটি বছর আমায় অনেক শিক্ষা দিয়েছো,
যেথায় পা ফেলতাম তোমার অভাবের গ্লানি শুনতাম,
আপনজন স্বজনরা অভাবের লাগি তিরস্কার করতো।
অভাবের লাগি মোর হাতখালি কেউ বলতো না,
কেমন আছো -স্বজনের কাছে টাকার পাহাড়,
সাহস করে চাহিবার কোন অজুহাত খুঁজে পেতাম না,
জানত মোর হাতে টাকা নেই- না জানার ভান করতো।
টাকার পাহাড় বেশি অসুবিধে পড়ে চাইলে বলতো,
মোর হাতে নেই বাবা টাকা অন্য কোথাও দেখো,
টাকার অভাবে কত্তো রাত জেগেছি ইয়ত্তা নেই,
টাকা হীন মানুষ মূর্তিমান কোন দাম নেই এ সংসারে।
অভাবের কালে যে বেশি ধৈর্য ধরে সেই জয়ী হয়,
অভাব কারো চিরকাল থাকে না একথা মেনেই চল,
অভাবের সময় প্রভুকেই বেশি বেশি স্মরণ করেছি,
প্রভু আজ খুশি হয়ে মোর অভাব পূর্ণ করেছেন।
২) বাগানের ফুল
মো. সাজ্জাদ হোসেন জামাল
পৃথিবীর সকল বাগানে প্রতিদিন ফুটে কত ফুল,
কিছু ফুল অংকুরেই ঝরে পড়ে রাখেনা কেউ খবর,
কিছু ফুল কারো কারো খুব প্রিয় হয় বাদবাকি ;
দিন শেষে ঝরে পড়ে অনাদরে আর অবহেলায়।
প্রিয় ফুলগুলো মানুষের কাছে খুব দামী দিনশেষে,
অনাদরে তারেও কিন্তু- বাসি হলে ডাস্টবিনে ফেলে,
ফুলগুলো এটাই প্রমাণ করে কেউ আজীবন কাউকে
তেমন করে ভালবাসে না – প্রয়োজনে দূরে সরে পড়ে।
মানুষের পরিবার হলো সাজানো বাগানের মতো,
শত মায়া মমতা আদর স্নেহের কত বাঁধনে ভরা,
একে একে সবাই ঝরে পড়ে কেউ রাখে না আর খবর
পরপারে চলে গেছে মা-বাবা স্বজন রাখে না খবর।
মানুষ মানুষকে কত আদর স্নেহ করে তবু ঝরে পড়ে,
কেউ চাইলেও শতবর্ষ পরে আর -জঞ্জালে পড়ে,
রাখতে চায় না নয়তো পারে না -তেমন করে খবর,
পরপারে যারাই আছে মোদের আপনজন রাখিনা খবর।